হাইমেনোপ্লাস্টি’ বা কুমারিত্ব ফিরিয়ে আনার অস্ত্রোপচার অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে চলেছে যুক্তরাজ্যে।
সম্প্রতি একটি স্বাস্থ্য বিলের সংশোধনীতে বলা হয়েছে, নারীর ইচ্ছা বা অনিচ্ছা যাই হোক, হাইমেনোপ্লাস্টি বেআইনি বলে গণ্য হবে। সরকার বলছে, কুমারিত্ব ফিরে পাওয়ার চিকিৎসাকে বৈধতা দেয়ার মানে হল, কুমারিত্ব রক্ষা করার দাবিকেও মেনে নেয়া। কেয়ার ও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মন্ত্রী গিলিয়ান কিগান বলেছেন ।
ব্রিটিশ সরকার "এই দেশে দুর্বল নারী ও মেয়েদের সুরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ"!
গত বছর জুলাইতেই এই আইন আনার অঙ্গীকার করে যুক্তরাজ্য সরকার। সে সময় থেকেই চিকিৎসক, নার্স এবং এ নিয়ে প্রতিবাদীরা এই অস্ত্রোপচারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার দাবি জানায়। রয়্যাল কলেজ অফ অবস্টেট্রিসিয়ান অ্যান্ড গাইনোকলজির প্রেসিডেন্ট ড. এডওয়ার্ড মরিস বলছেন, চিকিৎসা শাস্ত্রের নীতিতে হাইমেনোপ্লাস্টি কোনওভাবেই ন্যায়সঙ্গত নয়। কুমারীত্ব পরীক্ষা এবং তথাকথিত কুমারীত্ব ফেরানোর এই অস্ত্রোপচারের বিরুদ্ধে অনেকদিন ধরেই প্রচার চালাচ্ছেন তিনি।
কুমারিত্ব সংক্রান্ত যে সংস্কারটি বিভিন্ন দেশের গোঁড়া সমাজে চালু আছে, তা হল এক জন নারীকে বিবাহিত হওয়ার আগে পর্যন্ত তাঁর দেহের কৌমার্য্য অক্ষত রাখতে হবে।
ইরাক, ইরান, আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, পশ্চিম ইউরোপ এবং পশ্চিম এশিয়ার কিছু দেশ এমনকি ভারতেও এই কুমারিত্ব ফিরিয়ে আনার চিকিৎসা করা হয়। এই চিকিৎসা স্ত্রী-রোগের মূল ধারার চিকিৎসার অধীন নয়। বরং একে প্লাস্টিক সার্জারি বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।এই চিকিৎসার অনেকগুলি ভাগ রয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হাইমেনোপ্লাস্টি বা হাইমেন প্রতিস্থাপন। ব্রিটেনের নতুন হেলথ এবং কেয়ার আইনে এই হাইমেন প্রতিস্থাপনকেই অপরাধ বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
নতুন আইনে বলা হয়েছেঃ
যে সমস্ত ক্লিনিকে এই ধরনের চিকিৎসা করা হবে বা যে চিকিৎসক এই চিকিৎসা করবেন, তাদেরও সমান দোষী বলে গণ্য করা হবে। ধরে নেওয়া হবে তারা এ কাজে মদত দিচ্ছেন। আর অপরাধ প্রমাণ হলে জেল হবে পাঁচ বছর পর্যন্ত।
ইউকে'র কোনো বাসিন্দা যদি এই চিকিৎসা করাতে দেশের বাইরেও যান, তবুও তাকে অপরাধী বলেই গণ্য করা হবে। এই সিদ্ধান্ত অধিকাংশ মহলেই প্রশংসা পেয়েছে। তবে একই সঙ্গে মৌলিক অধিকার রক্ষা নিয়ে আন্দোলনকারীরা প্রশ্ন তুলেছে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে।
তারা জানতে চেয়েছে, চিকিৎসার ক্ষেত্রে কারও ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে কিনা? কেউ নিজে শরীরে কোনো অঙ্গ প্রতিস্থাপন করবেন কি করবেন না, তা সরকার ঠিক করে দেয়া উচিৎ নয় বলে মনে করছে তারা।