শনিবার রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বাংলাদেশের ত্রয়োদশ সিইসি হিসেবে নিয়োগ দেন সাবেক আইন সচিব (সর্বশেষ প্রতিরক্ষা সচিব)৬৬ বছর বয়সী হাবিবুল আউয়ালকে।
তার সাথে আরও চারজনকে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।তারা হলেন- অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ রাশেদা সুলতানা এমিলি এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান।
হাবিবুল আউয়াল পাঁচ বছর আগে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেন। এরপর ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে আইন বিভাগে শিক্ষকতা করছিলেন তিনি।
হাবিবুল আউয়ালের পৈত্রিক বাড়ি চট্টগ্রামের সন্দীপে, বাবার চাকরি সূত্রে জন্ম কুমিল্লায়। হাবিবুল আউয়ালের বাবা কাজী আবদুল আউয়াল ডিআইজি প্রিজন। ১৯৭৫ সালের জেল হত্যা মামলার বাদী ছিলেন তিনি।
BBCN বিশেষ সংবাদ
হাবিবুল আউয়াল ১৯৭২ সালে খুলনার সেন্ট জোসেফ’স হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৭৪ সালে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন তিনি।
বিসিএস ১৯৮১ ব্যাচের এই কর্মকর্তা সরকারি চাকরি শুরু করেন মুনসেফ (সহকারী জজ) হিসেবে। ১৯৯৭ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে পদোন্নতি পান।
২০০০ সালের ডিসেম্বরে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব হন হাবিবুল আউয়াল। ২০০৪ সালে হন অতিরিক্ত সচিব। ২০০৭ সালে পদোন্নতি পেয়ে একই মন্ত্রণালয়ের সচিব হন তিনি।
সচিব হওয়ার পর ২০০৯ সালে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত আইন মন্ত্রণালয়েই ছিলেন হাবিবুল আউয়াল।
বিচার বিভাগের এই কর্মকর্তার আইন সচিব হিসেবে নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করে ২০১০ সালে রায় দেয় আদালত। আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে হাবিবুল আউয়ালের নিয়োগের সময় নীতিমালা মানা না হওয়ায় আদালত তার নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করে।
আইন সচিব থাকা অবস্থায় বিধিবহির্ভূতভাবে দুই বিচারককে অবসরে পাঠানো নিয়েও জটিলতায় জড়িয়েছিলেন হাবিবুল আউয়াল। সংসদীয় কমিটি এজন্য তাকে তলব করলে তিনি ওই ঘটনার দায় মাথায় নিয়ে ক্ষমাও চান।
ওই সব ঘটনার পর ২০১০ সালে এপ্রিলে ধর্ম সচিব করা হয় হাবিবুল আউয়ালকে। পরে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব করা হয়।
২০১৪ সালে সেখান থেকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব করে পাঠানো হয় তাকে। ওই বছরই পদোন্নতি পেয়ে জ্যেষ্ঠ সচিব হন তিনি।
২০১৫ সালের জানুয়ারিতে অবসরে যাওয়ার কথা ছিল হাবিবুল আউয়ালের। কিন্তু পিআরএল বাতিল করে তাকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে এক বছরের চুক্তিতে নিয়োগ দেয় সরকার।
২০১৬ সালে আরও এক বছর বাড়ানো হয় চুক্তির মেয়াদ। এরপর ওই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থেকেই জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে ২০১৭ সালে অবসরে যান তিনি।
আজ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শানিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব পেলেন সাবেক এই আমলা। বাংলাদেশের গত দশ বছরের জাতীয় ও স্থানীয় সব নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়েই বড় ধরনের প্রশ্ন রয়েছে। কাজী রকিব যেমন যে দিকে শক্তি তাল গাছ সেদিকেই দিয়েছেন বলে আভিযোগ আছে তেমনি কাজী না হলেও নুরুল হুদার ব্যাপারেও অভিযোগ একই। এবার দেখার বিষয় নতুন কাজীর বিচার কতটা স্বচ্ছতা পায়।