রাণী এলিজাবেথের রাজত্ব গ্রহণের ৭০ বছর পূর্ণ হয়েছে। এই উপলক্ষে চলছে প্লাটিনাম জুবিলী উদযাপন।
রাণী এলিজাবেথের পরিচিতি
রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ পুরো নাম এলিজাবেথ আলেকজান্ড্রা ম্যারি; জন্ম: ১৯২৬ সালের ২১ শে এপ্রিল লন্ডনের মেইফেয়ারে।
তিনি যুক্তরাজ্য এবং আরও ১৫ টি কমনওয়েলথভুক্ত রাষ্ট্রের রাণী।
তিনি যুক্তরাজ্য এবং আরও ১৫ টি কমনওয়েলথভুক্ত রাষ্ট্রের রাণী।
কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাননি এলিজাবেথ, বাড়িতেই ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষিত হয়েছিলেন এই রাজকুমারী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ স্থলসেনাবাহিনীর নারী বিভাগ অগজিলিয়ারি টেরিটোরিয়াল সার্ভিসে (Auxiliary Territorial Service) কর্মরত থেকে জনসাধারণের দায়িত্ব পালন শুরু করেছিলেন। ১৯৪৭ সালে তিনি গ্রিক ও ডেনমার্কের প্রাক্তন রাজপুত্র ডিউক অফ এডিনবরা ফিলিপকে বিয়ে করেন।
এলিজাবেথ-ফিলিপ দম্পতির চারটি সন্তান হয়: ওয়েলসের যুবরাজ চার্লস; রাজকুমারী অ্যান; ইয়র্কের ডিউক যুবরাজ অ্যান্ড্রু; এবং ওয়েসেক্সের যুবরাজ আর্ল এডওয়ার্ড।
রাজমুকুট গ্রহণ
১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারী বাবা ষষ্ঠ জর্জের মৃত্যুর পর এলিজাবেথের উপর রাজত্বের দায়িত্ব পড়ে।
১৯৫৩ সালের ২ জুন মাথায় রাজমুকুট পরার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক রাজ অভিষেক ঘটে এলিজাবেথ আলেকজান্ড্রা ম্যারির।সেই থেকে অদ্যাবধি রাণী হিসেবে অধিষ্ঠিত আছেন এই মহীয়সী নারী।
যুক্তরাজ্য এবং কমনওয়েলথভুক্ত ১৬ দেশের বর্তমান রাণী
শুধু যুক্তরাজ্য নয় বর্তমানে আরো ১৫ দেশের রাণী হিসেবে স্বীকৃত ২য় এলিজাবেথ। দেশগুলো হলো-
কানাডা ১৯৫২–বর্তমান
অস্ট্রেলিয়া ১৯৫২–বর্তমান
নিউজিল্যান্ড ১৯৫২–বর্তমান
জামাইকা ১৯৬২–বর্তমান
বারবাডোস ১৯৬৬–বর্তমান
বাহামাস ১৯৭৩–বর্তমান
গ্রেনাডা ১৯৭৪–বর্তমান
পাপুয়া নিউগিনি ১৯৭৫–বর্তমান
সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ১৯৭৮–বর্তমান
টুভালু ১৯৭৮–বর্তমান
সেন্ট লুসিয়া ১৯৭৯–বর্তমান
সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইন দ্বীপপুঞ্জ ১৯৭৯–বর্তমান
বেলিজ ১৯৮১–বর্তমান
অ্যান্টিগুয়া ও বার্বুডা ১৯৮১–বর্তমান
সেন্ট কিট্স ও নেভিস ১৯৮৩–বর্তমান
এছাড়া আরো যে ১৬ দেশের রাণী ছিলেন এলিজাবেথ আলেকজান্ড্রা ম্যারি
পাকিস্তান ১৯৫২–১৯৫৬
দক্ষিণ আফ্রিকা ১৯৫২–১৯৬১
শ্রীলঙ্কা ১৯৫২–১৯৭২
ঘানা ১৯৫৭–১৯৬০
নাইজেরিয়া ১৯৬০–১৯৬৩
সিয়েরা লিওন ১৯৬১–১৯৭১
তানজানিয়া ১৯৬১–১৯৬২
ত্রিনিদাদ ও টোবাগো ১৯৬২–১৯৭৬
উগান্ডা ১৯৬২–১৯৬৩
কেনিয়া ১৯৬৩–১৯৬৪
মালাউয়ি ১৯৬৪–১৯৬৬
মাল্টা ১৯৬৪–১৯৭৪
গাম্বিয়া ১৯৬৫–১৯৭০
গায়ানা ১৯৬৬–১৯৭০
মরিশাস ১৯৬৮–১৯৯২
ফিজি ১৯৭০–১৯৮৭
রাণী এলিজাবেথের গুরুত্বপূর্ণ সফর ও ঘটনা
রাণী এলিজাবেথের গুরুত্বপূর্ণ সফর ও ঘটনার মধ্যে রয়েছে আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্রে একটি রাষ্ট্রীয় সফর, পাঁচবার পোপের পোপের সাথে দেখা করা।
এছাড়া ১৯৫৩ সালে তাঁর রাজ্যাভিযান, ১৯৭৭ সালে সিলবার জুবিলী, ২০০২ সালে গোল্ডেন জুবিলী এবং ২০১২ সালে ডায়মন্ড জুবিলী পালন উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ২০১৭ সালে, তিনি সাফায়ার জুবিলীতে পৌঁছানো প্রথম ব্রিটিশ রাজশাসক হয়েছিলেন।
সবচেয়ে বয়স্ক এবং দীর্ঘজীবি রাজশাসক
রাণী এলিজাবেথ সবচেয়ে দীর্ঘজীবী এবং সবচেয়ে দীর্ঘকালীন ব্রিটিশ রাজশাসক। বিশ্বের ইতিহাসেও তিনি দীর্ঘতম শাসনকারী নারী রাষ্ট্রপ্রধান এবং বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত রাজশাসক। বর্তমানে জীবিত রাজা-রাণীদের মধ্যেও সবচেয়ে বেশি সময় ধরে শাসনকারী রাষ্ট্র শাসক এবং বর্তমান রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে সবচেয়ে প্রবীণ ও দীর্ঘকালীন রাষ্ট্রপ্রধান।
২৭ শে মে ২০২২ তারিখে বিশ্ব ইতিহাসে সার্বভৌম রাষ্ট্রের দীর্ঘকালীন শাসনকর্তা হিসাবে ফ্রান্সের চতুর্থ লুইকে ছাড়িয়ে গেছেন এলিজাবেথ দ্বিতীয়।
প্লাটিনাম জুবিলী
এই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি তার রাজত্বের ৭০ বছর পূর্ণ হয়েছে (রাজ মুকুট গ্রহণ করে আনুষ্ঠানিক অভিষেকের ৭০ বছর পূর্ণ ২ জুন) এই উপলক্ষে জুনের ১ তারিখ থেকে রাণীর প্লাটিনাম জুবিলী উদযাপন শুরু হয়েছে। গতকাল ২ জুন ছিল সারা যুক্তরাজ্য ব্যাপী আনুষ্ঠানিক উদযাপন।
লন্ডনের বাকিংহাম প্যালেস, হাইডপার্ক, অলিম্পিক পার্ক সহ সারা যুক্তরাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উৎসবে মাতোয়ারা ছিল সারা দেশ।
এদিকে বাকিংহাম প্যালেসে বেলকনিতে "ট্রুপিং দ্যা কালার" নামে রয়েল ফ্যামিলির অনুষ্ঠানে স্থান হয়নি রাণীর নাতি হ্যারি এবং নাতবউ মেগানের। তারা সন্তান সহ রাণীর সেলিব্রেশনে যোগ দিতে আটলান্টা থেকে যুক্তরাজ্যে এসেছিল। তাদেরকে লো প্রোফাইল কাপল হিসাবে ট্রিট করা হয়েছে। তবে তারা জানালা দিয়ে "ট্রুপিং দ্যা কালার" অনুষ্ঠান দেখেছিল।
--------